বিজ্ঞাপণের জন্য যোগাযোগ করুন- 01966555312

হিন্দু সম্প্রদায়কে ধর্মীয় উগ্রতার বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান

শরীয়তপুরটাইমস্ ডেস্ক:
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ব্যক্তিরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনোভাবেই যেন দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে তাদের আশ্রয় দেওয়া ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তি ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সহায়তায় বাংলাদেশের সাধারণ হিন্দুদের মধ্যে হিন্দুত্ববাদী উচ্চতার জমিন তৈরি করেছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তারা সেটাকে কাজে লাগিয়ে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে, মিথ্যাচার ছড়িয়ে দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চাইছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পরপরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে বিবৃতি পাঠানো হলো, সেটি স্বাভাবিক কূটনৈতিক কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে না। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তিনি ভারতীয় নাগরিক নন। তাঁর জামিন কেন দেওয়া হলো না—এই প্রশ্ন পরোক্ষভাবেও অন্য কোনো রাষ্ট্র করতে পারে না। ভারতের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘুদের যে পরিস্থিতি, তাতে অন্য দেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কোনো নৈতিক অধিকারই বিজেপি সরকারের নেই। এসব কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অস্থিরতা ও দাঙ্গার পরিবেশ সৃষ্টি করা, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঘটানো এবং ভারতে বিজেপির ক্ষয়িষ্ণু অবস্থানকে পুনরুদ্ধার করা।

বিগত আওয়ামী লীগের আমলেও দেশব্যাপী হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা জমি দখল, মন্দির ভাঙচুর, এমনকি হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সারা দেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এবার গণ–অভ্যুত্থানের চেতনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দির পাহারায় এগিয়ে আসে এবং নতুন করে সম্প্রীতির নজির স্থাপন করে। অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সব নাগরিকের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে অঙ্গীকার করে—এর প্রতিফলন এবারের দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধানের মধ্যে লক্ষ করা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মনে রাখতে হবে, কিছু ধর্মীয় সংগঠন মানেই এই দেশের সমগ্র হিন্দু সম্প্রদায় নয়। এই দেশের হিন্দুরা বরাবরই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে। স্বাধীনতাযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হিন্দু জনগোষ্ঠীর লোকজনের উজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে হিন্দু জনগোষ্ঠীরও কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। এই সংকটময় সময়ে বাংলাদেশের হিন্দু জনসমাজের, বিশেষ করে তরুণসমাজের সচেতন প্রতিনিধিদের কাছে আমাদের আহ্বান, নিজ নিজ জায়গা থেকে সব ধরনের ধর্মীয় উগ্রতা, সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিবেকবান ও দায়িত্বশীল নাগরিকের ভূমিকা পালন করুন।’

বিবৃতিদাতারা হলেন দেবাশিস চক্রবর্তী, দীপক সুমন, খোকন দাস, প্রীতম দাস, মেঘমল্লার বসু, দ্রুবজ্যোতি হোর, সীমা দত্ত, স্নেহার্দ্রী চক্রবর্তী, জয়দীপ ভট্টাচার্য, অনিক রায়, বিথী ঘোষ, ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য, সজীব চক্রবর্তী, দীপংকর বর্মণ, দুর্জয় রায়, নয়ন সরকার ও সজীব কিশোর চক্রবর্তী।

Post a Comment

Thnaks For Comment

Previous Post Next Post