নিজস্ব প্রতিবেদক:
শরীয়তপুরের জাজিরায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযান চলাকালে মিলন বেপারী(৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের দাবী ডিবির মারধরের শিকার হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আর পুলিশ বলছে আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল শনিবার(২৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু বেপারী কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মিলন বেপারী ওই এলাকায় মৃত আমজাদ বেপারীর ছেলে। তিনি একটি মুদি দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
জেলা পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে পদ্মা সেতু জাজিরা প্রান্ত এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চালায় জেলার গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নওশের আলীসহ ডিবির ৮ সদস্য। অভিযান চলাকালে মোজাম্মেল নামের এক ব্যক্তিকে গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালু বেপারী কান্দি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় জামাল বেপারীর প্রতিবেশী ও মামা মিলন বেপারী আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তার মৃত্যু হয় বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। তবে পরিবারের অভিযোগ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে ঘর থেকে বের করে মারধর করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন
নিহতের স্ত্রী রেনু বেগম অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পরিচয়ে রাতে বাড়ি তল্লাশী করার পর আমার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে। মারধর করায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
নিহতের ছেলে আল-আমিন বলেন, আমাদের সামনে আমার বাবাকে ডিবির লোকজন মারধর করেছে। মারধর করলে তার মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে মারা গেছেন। ডিবির লোকজন আমার বাবাকে মেরেছে।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার(আরএমও) আকরাম এলাহী বলেন, গতকাল রাতে মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছিলো। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলাফল আসলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
জানতে চাইলে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু বকর মাতুব্বর বলেন, পদ্মা সেতু এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চলাকালে তার মামা ও প্রতিবেশী মিলন বেপারী আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলো। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডিবির সদস্যরা তার পরিবারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং আসামীদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে জানা যায় ওনি মারা গেছে। তবে ডিবির মারধরের বিষয়টি সত্য নয়।
এবিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আদিবুল ইসলাম বলেন, "ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি কোনো অফিসারের অসদাচরণ থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"