নিজস্ব প্রতিবেদক:
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কুপিয়ে ও পিটিয়ে একই পরিবারের ৫ জনকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এসময় ভুক্তভোগীদের বাড়ীতে লুটপাট চালায় অভিযুক্ত আসামিরা। হামলায় ছাদেক আলী দেওয়ান, জাহান উল্লাহ দেওয়ান, তার ছোট ভাই রুবেল দেওয়ান, ভাগ্নি মারুফা ও তার মা হাসিনা বেগম গুরুতর আহত হন।
গত ২৮ ডিসেম্বর উপজেলার সখিপুরের চরভাগা ইউনিয়নের পূর্ব ঢালী কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত জাহান উল্লাহ দেওয়ান বাদী হয়ে মোমিন আলী দেওয়ানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে সখিপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাবিবুর রহমান ওরফে মানিক নামে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করে।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন উপজেলার চরভাগা ঢালী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী দেওয়ানের ছেলে হাবিবুর রহমান মানিক(৪৫), মৃত হযরত আলী দেওয়ানের ছেলে মোমিন আলী দেওয়ান(৭০), আ: হক গাইনের ছেলে লিটন গাইন(৪২), মোমিন আলী দেওয়ানের ছেলে রাসেল দেওয়ান(৪৫), আহসান উল্লাহ্ দেওয়ান(৩৫), লিটন গাইনের ছেলে হৃদয় গাইন(২৮) ও রিফাত গাইন(১৯)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জাহান উল্লাহ দেওয়ান ও মোমিন আলী দেওয়ানের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে গত ২৮ ডিসেম্বর মিমাংসা করে দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় সালিশরা চলে যাওয়ার পরে একটি হাঁস-মুরগির খোয়ার সরানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পীতভাবে মোমিন আলী দেওয়ানসহ অন্য আসামিরা গালিগালাজ শুরু করে। জাহান উল্লাহ দেওয়ানের বাবা ছাদেক আলী দেওয়ান গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আসামীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় ছেনদা ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এসময় ছাদেক আলী দেওয়ানকে বাঁচাতে আসলে জাহান উল্লাহ, তার ছোট ভাই রুবেল দেওয়ান, ভাগ্নি মারুফা ও তার মা হাসিনা বেগমকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। এসময় তার ভাগ্নি মারুফাকে শ্লীলতাহানি করে আসামীরা। এছাড়াও তাদের বাসা থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে ছাদেক দেওয়ান, রুবেল দেওয়ান, হাসিনা বেগম, মারুফাকে চিকিৎসা দিলেও জাহান উল্লার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহান উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মোমিন আলী দেওয়ানদের সাথে আমাদের জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ চলে আসছে। মোমিন আলী সম্পর্কে আমার চাচা হয়। তাদের কাছ থেকে জমি পাইলেও স্থানীয় সালিশরা জমি বুঝিয়ে দিতে বললেও তারা দেয়নি। ওই দিন স্থানীয় সালিশরা জমিজমা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মাপজোক করলে সেটা তারা না মেনে চলে যায়। পরে একটি হাঁস-মুরগির খোয়ার সরানোকে কেন্দ্র করে আমার পরিবারের সবাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভয়ংকরভাবে হামলা করে তারা। আমার বাবা ছাদেক দেওয়ান ও ছোট ভাই রুবেল দেওয়ানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। আর আমাকে হত্যার জন্যই আমার উপর এই হামলা করা হয়। আমি এই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের বাড়ীতে গেলে তাদের পাওয়া যায় নি। তাদের মোবাইল ফোনে ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানা যায়, ঘটনার পর থেকেই তারা সবাই পলাতক রয়েছে।
এবিষয়ে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, মারধরের ঘটনা মামলা হয়েছে। আমরা ইতমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছি। বাকী আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যহত আছে।