নিজস্ব প্রতিবেদক:
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় স্বামীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক স্ত্রী ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সজীব ভূইয়া বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং(সি.আর ৫৯২)। এর আগে গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে নড়িয়া উপজেলার মধ্য সুরেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন নড়িয়া উপজেলার মধ্য সুরেশ্বর গ্রামের মৃত আবুল হোসেন রাড়ীর মেয়ে শাহনাজ বেগম(৩৪) তারবোন সুমি বেগম(৩১), ভাই বাচ্চু রাড়ী(৪২) নাসির রাড়ী(৩৭)।
আহত সজীব ভূঁইয়া(৩৮) নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি উপজেলার মধ্য সুরেশ্বর গ্রামের মৃত মোস্তফা ভূঁইয়ার ছেলে। শাহনাজ-সজীব দম্পতির এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় বিশ বছর আগে শাহনাজ বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় সজীব ভূইয়ার। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। শাহনাজের সাথে সজীবের বনিবনা না হওয়ার ২০২৩ সালের মে মাসে শাহনাজকে তালাক দেন সজীব। এরপর থেকে সজীব চাকুরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস করেন। তবে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী শাহনাজ জোরপূর্বক সজীবের বাড়িতেই থাকতেন। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিক বার মিমাংসার চেষ্টা করলেও তা আর হয় নি। গত বুধবার রাতে বাড়ীর পাশে নদীর পাড়ে সজীবের ওপর হামলা করে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী সহ ৪/৫ জন। এ সময় তার চিৎকারে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সজীবের পরিবারের লোকজন তাকে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী সজীব ভূইয়া বলেন, বিশ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। আমার সাথে তার বনিবনা না হওয়ার ২০২৩ সালের মে মাসে আমি তাকে তালাক দেই এবং নিয়মিত আমার সন্তানদের খবর দিয়ে দেই। সে আমার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী হয়েও জোরপূর্বক আমার বাড়িতেই থাকে এবং প্রতিনিয়ত আমার বৃদ্ধ মা কে হুমকি-ধামকি দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিক বার মিমাংসার চেষ্টা করছি কিন্তু সে শুনে না। আমি চাকরির ক্ষেত্রে ঢাকায় বসবাস করি। ওই দিন রাতে আমি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম এসময় আমার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী সহ ৪/৫ জন মিলে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করে। এরপর আমাকে এলাকার মানুষ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও সেখানে গিয়েও তারা চিকিৎসা নিতে দেয় নি। আমি মামলা করেছি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার আসা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনাজ বেগম জানান, আমাদের বিয়ে হয় বিশ বছর আগে এরপর সংসার ভালোই ছিলো। তবে তিনি বিভিন্ন মেয়েদের সাথে পরকীয়া করতো সেগুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া হতো। আমার দুটি সন্তান রয়েছে আজ দুই বছর ধরে সন্তানদের খাবার, পড়াশোনার খরচ কিছুই সে দেয় না। আমাকে তালাক দিয়েছে এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাকে মারধর করেছেন কি না এমন প্রশ্নে? আমার ভাইরা তার কাছে টাকা পায় তাই দিতে না চাওয়ায় তাকে মারধর করছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, 'আদালতের নির্দেশ পেলে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।’