নিজস্ব প্রতিবেদক:
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে অর্ধশত বছর ধরে দখল দূষণে থাকা একটি খাল উদ্ধারে অভিযান শুরু করছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। আর খালটি সচল হলে মশা-মাছির উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে সুফল মিলবে বলে জানান কৃষকরা।
গত বৃহস্পতিবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে খালটির প্রবাহ ফেরানোর কাজের উদ্বোধন করেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল।
খালটির বেশকিছু এলাকা প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে স্থাপনা, দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। এ ছাড়া ওই এলাকার বাসিন্দারা নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালটি বন্ধ হয়ে পরিবেশ দূষণ করছে। এতে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের সাজনপুর খাল পদ্মার কীর্তিনাশা থেকে শুরু হয়ে ডামুড্যা পর্যন্ত এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে খালটির অবস্থান। একসময় পানি প্রবাহ সচল থাকায় খালটি দিয়ে চলাচল করত বিভিন্ন নৌযান। তবে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারিয়েছে প্রবহমান খালটি। খালটির বিভিন্ন অংশে দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। এতে মশা মাছির উৎপাত বেড়ে ভোগান্তির শিকার হন ইউনিয়নের বাসিন্দারা। পাশাপাশি কৃষি জমির পানি খালে নামতে না পেরে বর্ষাকালে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে এটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
অনিন্দ্য মন্ডল, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোহাম্মাদ মোজাহেরুল হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা ইসলামকে সাথে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। দুদিন ধরে খালটি উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন খালটি পুরোপুরি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মোস্তফা ভূঁইয়া নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই খাল দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো। এখন দূষণের কারণে মশা মাছির উপদ্রব বেড়েছে এবং ডেঙ্গুর মতো বিভিন্ন রোগ ছড়াচ্ছে। প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই দ্রুত খালটি সচল করা হোক। এতে আমাদের অনেক উপকার হবে। এই খালটি পুনরায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হোক। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনির হাওলাদার বলেন, প্রশাসন একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। পলিথিন জমে খালটি এখন দূষণে পরিপূর্ণ। পানি সরাতে না পারায় তীব্র দুর্গন্ধে মশা মাছির উপদ্রব দেখা দিয়েছে। খালটি সচল হলে পানি প্রবাহ শুরু হবে এবং পরিবেশটি সুন্দর হয়ে উঠবে। আমাদের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) অনিদ্র মণ্ডল বলেন, খালটির পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। প্রশাসনের একার পক্ষে এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আশপাশের বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে, ময়লা-আবর্জনা খালে না ফেললে এর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।