বিজ্ঞাপণের জন্য যোগাযোগ করুন- 01966555312

ভেদরগঞ্জে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের ইলিশ অভয়াশ্রম।

এসময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া জেলেদের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে মোট ১৬০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এসব চাল ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) থেকে নিবন্ধিত জেলেদের কার্ড যাচাই বাছাই করে বিতরণ করেন জনপ্রতিনিধিরা।

চলতি জাটকা মৌসুমে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের ৮০ কেজি চালের মধ্যে ৩ থেকে ৪ কেজি করে চাল কম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলেরা। অভিযোগ রয়েছে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কবির হোসেন এই অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে জেলেদের চাল বিতরণ অনিয়ম এর আগেও অভিযোগ উঠলেও উপজেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে অবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবারই তিনি অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। এতে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রবিবার(১৬ মার্চ) বিকেলে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখ যায় জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে চাল দেয়া হলেও সেখানে নেই কোনো চাল পরিমাপের যন্ত্র। এসময় স্থানীয়রা জানান জেলেদের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। জনপ্রতি ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেওয়া হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৭ কেজি করে। এ নিয়ে স্থানীয় জেলেদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কবির হোসেনের ভয়ে মুখ খুলতে চান না অনেক জেলে। এদিকে ওই ইউনিয়নে জেলেদের অভিযোগ বস্তাগুলো ফুটো করে চাল কমিয়ে ফেলা হয়। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে জানালেও জেলেদের কথা না শুনে উল্টো তাদের উপর ক্ষিপ্ত হন সচিব কবির হোসেন। তাই ভয়ে কথা বলতে চায় না স্থানীয় জেলেরা। 

রবিউল ও আল-আমীন হোসেন নামে দুই জেলে  বলেন, আমরা সরকারের দেওয়া অভিযান মেনে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছি। সংসার চলে না। সন্তানদের নিয়ে খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। এরপর দুই মাসের ৮০ কেজির চালের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে ৭৬-৭৭ কেজি। এ অনিয়মের বিচার করবে কে? সচিব কবির হোসেন কে বললে তিনি আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। আর চেয়ারম্যান এসে চলে গেছে তাকেও বলে লাভ হয় না। এখন কম দিলেও আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা এখন প্রতিবাদ করবো আপনারা চলে গেলে পরে আমাদের সমস্যা হবে।

জানতে চাইলে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কবির হোসেন বলেন, খাদ্য সহায়তা নেওয়ার জন্য জেলেদের কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। চাল কম দেওয়া হয় না। আমরা খাদ্য গুদাম থেকে যে পরিমাণ পাই, সে পরিমাণই জেলেদের দেওয়া হয়। বস্তার মধ্যে চাল কম থাকলে আমাদের সঠিকভাবে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে চাল বিতরণ মেপে দেওয়া হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হয় নি।

সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার চাল কম দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি চাল বিতরণের উদ্বোধন করে দিয়ে এসেছি। অনিয়ম কিছুটা হতেই পারে। ফেরেশতা ছাড়া সঠিক মাপে দেওয়া সম্ভব না। তাছাড়া প্রতিটি বস্তার ওজন প্রায় এক কেজি। এসব কারণে কিছু চাল কম হয়। এতো চাল তো আর মেপে দেওয়া সম্ভব না।

ট্যাগ অফিসার ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘প্রতি বস্তায় চাল কম আছে তাই আমাদের কিছুই করার নেই। সুবিধাভোগীদের চাল মেপে দিচ্ছেন না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি ইউনিয়ন সচিব কবির হোসেনের সাথে কথা বলেন। আমি এর বাইরে কিছুই বলতে পারবো না সবকিছু সচিব সাহেব বলতে পারবে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, জেলেদের চাল কম দেওয়ার সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

Thnaks For Comment

Previous Post Next Post