ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় শুরু হয়েছে ‘মা ইলিশ রক্ষা অভিযান ২০২৫’। এবারের অভিযানকে আরও কার্যকর করতে মাঠে নামানো হয়েছে আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি। নদীর বুকে উড়ে বেড়ানো এই ড্রোন এখন পাহারা দিচ্ছে ইলিশের নিরাপদ প্রজননভূমি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এ নজরদারি কার্যক্রম। ড্রোনের মাধ্যমে নদীপথ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অবৈধ মাছ ধরা, জাটকা নিধন ও নিষিদ্ধ সময়ে জাল ফেলাসহ নানা অনিয়ম রোধে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
অভিযান পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ মাহবুবুর রহমান ও মোঃ মামুন অর রশিদ চৌধুরী, জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল শরীফ এবং মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মোশাররফ হোসেন।
উপজেলা মৎস অফিস সূত্রে জানা যায়, নদীপথে স্থল ও জল টহলের পাশাপাশি আকাশপথে ড্রোনের রিয়েল-টাইম ভিডিও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ড্রোনে ধারণ করা ফুটেজ সরাসরি নিয়ন্ত্রণকক্ষে পাঠানো হয়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর ফলে মা ইলিশ ধরার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তির এই ব্যবহার মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে এনেছে নতুন গতি। এতে নদীতে নজরদারি বাড়ার পাশাপাশি অভিযানের কার্যকারিতাও বেড়েছে বহুগুণ।
মা ইলিশ রক্ষা অভিযান ২০২৫-এর মূল লক্ষ্য হলো—প্রজননকালীন ইলিশ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও জেলেদের টেকসই জীবিকা নিশ্চিত করা। সরকার ঘোষিত এই অভিযানে জেলার বিভিন্ন স্থানে নৌ-পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ রেজাউল শরীফ শরীয়তপুর টাইমসকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণ শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। নদীতে ড্রোন নজরদারির ফলে অবৈধ জাল ফেলা ও মাছ ধরার প্রবণতা অনেকটাই কমে এসেছে। আমরা চাই, জনগণের সহযোগিতায় এই অভিযান আরও সফল হোক এবং দেশের ইলিশ সম্পদ আগামীর প্রজন্মের জন্য টিকে থাকুক।”
