শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌর এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে শিকলবেঁধে রাখার পরে বাবা-মা স্থানীয় প্রশাসনকে জানান; ভ্রাম্যমাণ আদালত ফারুক ছৈয়ালকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
শওকত ছৈয়াল ও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ বেগম তাদের মাদকাসক্ত ছেলে ফারুক ছৈয়ালের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে একটি গাছের সাথে শিকলবেঁধে রেখে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযুক্তকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করে কারাগারে প্রেরণ করেন নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাকি দাস।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, নড়িয়ার লোনসিং গ্রামের ফারুক প্রবাস থেকে তিন বছর আগে দেশে ফেরেন। কিছুদিন শান্ত থাকার পরে তিনি পুনরায় মাদকসেবনে লিপ্ত হন এবং টাকার জন্য বারবার বাবা-মায়ের ওপর অত্যাচার চালাতে থাকেন। শনিবার দুপুরে নতুন করে মাদকের টাকার জন্য মারধর করলে প্রতিবেশীরা তাকে ধরে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়।
বাবা শওকত ছৈয়াল বলেন, “আমরা তাকে মাদক থেকে সরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। মাঝখানে ঠিকঠাক ছিল, কিন্তু আবার মাদকাসক্ত হয়ে উঠেছে। টাকা না দিলে মারধর করে—আমরা সহ্য করতে পারছি না। আমাদের মারধর করায় আজ স্থানীয়রা এসে আমাদের রক্ষা করেছে।”
মা শাহনাজ বেগম বলেন, “ও শুধু টাকার জন্য যা খুশি তাই করতে পারে। টাকা না দিলেই আমাকে মারধর করে। আমি চাই ওর কঠিন শাস্তি হোক। তাহলে হয়ত ও বদলে যেতে পারে।”
নড়িয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাকি দাস বলেন,“নেশার টাকার জন্য বাবা-মাকে মারধরের অভিযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালানো হলে অভিযুক্তের কাছ থেকে গাঁজা জব্দ করা হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়েই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
স্থানীয়রা এ ঘটনার পর পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং গ্রামীণ পর্যায়ে পুনর্বাসন ও সচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা করার দাবী জানিয়েছে।
