আজ সকালটা ছিল অন্যরকম। শরীয়তপুর জেলার নানা প্রান্ত থেকে শিশু-কিশোররা দলে দলে ছুটে এসেছে স্কুলের কেন্দ্রে। হাতে কলম, মুখে হাসি, চোখে স্বপ্ন—আজ তাদের মেধা যাচাইয়ের দিন।
শিশু-কিশোর ম্যাগাজিন কিশোর কণ্ঠ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো মেধা বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫।
জেলার ৬টি উপজেলায় ১০টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী। প্রাথমিক স্তরের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি থেকে শুরু করে মাধ্যমিক স্তরের দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শ্রেণিভেদে পৃথক প্রশ্নপত্রে অংশগ্রহণ করে। সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে ছিল উৎসবের আমেজ।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমা পরীক্ষার পর জানায়, “এমন পরীক্ষা আমাদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়ায়। প্রতিযোগিতা হয়, সবাই চেষ্টা করে ভালো করতে। আমি চাই প্রতিবছর এমন আয়োজন হোক।”
একজন অভিভাবক বলেন, “গ্রামের বাচ্চারাও যদি এমন সুযোগ পায়, তারা নিজেদের মেধা দিয়ে বড় হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে। এমন আয়োজন আমাদের সন্তানদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে।”
পরীক্ষা পরিদর্শনে এসে শরীয়তপুর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ বলেন, “কিশোর কণ্ঠের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করবে, বইয়ের বাইরে সাধারণ জ্ঞান অর্জনে উৎসাহিত করবে।”
কিশোর কণ্ঠ ফাউন্ডেশনের জেলা চেয়ারম্যান সাখাওয়াত কাউসার বলেন, “আমরা চাই শিক্ষার্থীরা কেবল পাঠ্যবই নয়, চারপাশের জগত সম্পর্কেও জানুক। এ মেধা পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের জ্ঞানচর্চার আগ্রহ বাড়বে, পাঠাভ্যাস গড়ে উঠবে, কিশোর অপরাধও কমবে। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
পরীক্ষা পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন জেলার শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকরা। সবাই একমত—এটি কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, শিশু-কিশোরদের মনের বিকাশের এক আলোকিত মঞ্চ।
দুপরে পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রাঙ্গণ ফাঁকা হলেও বাতাসে রয়ে গেছে অন্যরকম অনুভূতি— মেধা, মনন আর প্রতিযোগিতার এক মিলনমেলা হয়ে উঠেছে কিশোর কণ্ঠের এই আয়োজন।
